বিভিন্ন জাতের রাজহাঁসের বৈশিষ্ট্য

এসএসসি(ভোকেশনাল) - পোল্ট্রি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং-২ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | | NCTB BOOK
19
19

বিভিন্ন জাতের রাজহাঁসের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of different species of Goose )

টাউলোজ রাজহাঁস (Toulouse Goose)

  • এদের উৎপত্তি ফ্রান্সে।
  • এরা মাংসল ও বড় আকারের রাজহাঁস । 
  • দেহ লম্বা, প্রশস্থ ও গভীর বা মাটির সমান্তরাল করে রাখে। 
  • টাউলোজ রাজনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এদের বুক উঁচু, পুরু ও গভীর। 
  • ডানা লম্বা, লেজ খাটো, মাথা বড়, ঠোঁট মজবুত, গলা লম্বা ও পুরু এবং পা মজবুত।
  • পালকের রঙে গাঢ় ও হালকা ধূসরের মিশ্রণ দেখা যায় । 
  • ঠোঁট, পা ও পায়ের পাতা কমলা এবং চোখ খোলা বাদামি রঙের।
  • প্রাপ্তবয়স্ক হাঁসা ও হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ১২.৭-১৩.০ কেজি ৩৯১ - ১০০ কেজি হয়ে থাকে।

 

অ্যাম্বডেন  রাজহাঁস (Embdan Goose)

  • এ জাতের রাজহাঁসের উৎপত্তি জার্মানিতে। 
  • এদের দেহ প্রশস্থ, পুরু ও গোলাকার। 
  • পিঠ লম্বা, সোজা ও মজবুত।
  • ডানা দুটো আকারে লম্বা। 
  • মাথা লম্বা ও সোজা, ঠোঁট মজবুত । 
  • চোখ খুবই উচ্ছ্বল হয়ে থাকে। পা খুব খাটো, পালক শক্ত ও সুবিন্যস্থ। 
  • হাঁসা ও হাঁসী উভয়েই সাদা রঙের। 
  • ঠোঁট কমলা এবং চোখ হালকা নীল। 
  • পা ও পায়ের পাতা কমলা রঙের। 
  • প্রাপ্ত বয়স্ক হাঁসা ও হাঁসীর ওজন যা ১৩.৬ - ১৫.৪ কেজি ও ১১ - ১০.০ কেজি হয়ে থাকে।

 

আফ্রিকান রাজহাঁস (African Goose)

  • এরা আকারে বেশ বড় ও লম্বা। 
  • মাথা প্রশস্থ ও গভীর। 
  • মাধায় বড় ধরনের গুটি থাকে।
  • মাথা খাঁড়া করে চলাফেরা করে। 
  • পিঠ প্রশস্থ, চ্যাপ্টা ও লম্বা, বুক গোলাকার । 
  • ডানা বড় ও মজবুত এবং লেজ বড়।
  • এদের গলকমল রয়েছে যা পুরু ও বড়। 
  • পা মাঝারি পদ্মা।
  • হাঁসা ও হাঁসী উভয়ের মাথার রঙ হালকা বাদামি, ডোরাকাটা দাগ থাকে। 
  • প্রাপ্তবয়স্ক হাঁসা ও হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ৯.১০ ও ৮১৫ কেজি হয়ে থাকে।

 

আমেরিকান ধূসর রাজহাঁস (American Gray Goose)

  • এরা আকারে মাঝারি। বুক প্রশস্থ ও গভীর। 
  • ঘাড় থেকে লেজ পর্যন্ত পালক ধনুক আকৃতির । 
  • লেজে চ্যাপ্টা খাড়া পালক থাকে। 
  • মাথা আকারে মাঝারি ও ডিম্বাকৃতির। 
  • খাঁড়া ও মাঝারি লম্বা গলাটি চলাফেরার সময় উঁচু করে রাখে ।
  • মাথার পালক ফ্যাকাসে ধূসর এবং তা বুক পর্যন্ত বিস্তৃত। শরীরের পালক হালকা ধূসর রঙের এবং তা ক্রমশ ফ্যাকাসে হয়ে পেট, পিঠ ও লেজে সাদা পালকে রূপান্তরিত হয়েছে।
  • লেজের পালকে বাদামি ও সাদার মিশ্রণ হলেও প্রান্তগুলো ফ্যাকাশে ধূসর। 
  • ঠোঁট, পা এবং পায়ের পাতা কমলা রঙের, চোখ ঘোলাটে কালো। 
  • প্রাপ্ত বয়স্ক হাঁসা ও হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ৮.১৫ ও ৭.২৫ কেজি হয়ে থাকে।

 

ধূসর ব্রেকন রাজহাঁস (Gray Bracken Goose )

উৎপত্তিঃ এ জাতের রাজহাঁসের উৎপত্তিস্থল বৃটেনে। 

সাধারণ বৈশিষ্ট্য:

  • এরা আকারে মাঝারি এবং অত্যন্ত মাংসল । 
  • এ জাত খুবই প্রাণচঞ্চল এবং উর্বর ডিম উৎপাদক হিসেবে পরিচিত।
  • এদের শরীর প্রশস্থ, বুক গোলাকার, ডানা বড় ও মজবুত, গলা চিকন ও লম্বা ৷ 
  • এ জাতের রাজহাঁসের পা খাটো ও পালক আঁটোসাটো হয়। 
  • হাসা ও হাঁসি উভয়ের পালক ঘন ধূসর রঙের । 
  • পা ও ঠোঁট লালচে এবং চোখ গাঢ় বাদামি। 
  • হাঁসা ও হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ৮.৯০ ও ৭.২৫ কেজি হয়ে থাকে ।

 

ধূসর পিঠওয়ালা রাজহাঁস (Gray-backed Goose)

 উৎপত্তিস্থল: এ জাতের উৎপত্তি ইউরোপে।

  • শরীর মাটির সমান্তরাল। 
  • আকারে মাঝারি । পিঠ বাঁকানো, লম্বা ডানা লেজের পালককে অতিক্রম করে। 
  • মাথা প্রশস্ত ও সুন্দর । 
  • বড় বড় চোখ, মাথার পালক ধূসর। 
  • গলার উপরের পালক ধূসর, নিচের পালক সাদা । 
  • পিঠের ধূসর পালকের প্রান্ত সাদা। বুক, শরীর, পাখা, লেজ সাদা। তবে ডানার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পালকের মাথাগুলো ধূসর রঙের। 
  • ঠোঁট কমলা, চোখ নীল, পা ও পায়ের পাতা কমলা রঙের । 
  • প্রাপ্তবয়ষ্ক হাঁসা ও হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ৭.৭ ও ৬.৮ কেজি হয়ে থাকে ।

 

চীনা রাজহাঁস (Chinese Goose)

  • চীনা রাজহাঁস আকারে ছোট । 
  • এরা খুবই উর্বর জাতের রাজহাঁস। 
  • এদের দেহ সুঠাম ও খাড়া। এরা অত্যন্ত তৎপর । 
  • এদের পিঠ বেশ খাটো ও প্রশস্ত। বুক গোলাকার, ডানা লম্বা ও মজবুত এবং তা শরীরের সাথে মজবুতভাবে এটে থাকে । 
  • এদের মাঝারি আকারের মাথায় বড় আকারের গুটি থাকে। 
  • গলা খুব লম্বা, অনেকটা সোয়ানের মতো । 
  • পা খাটো ও মজবুত; দুপায়ের মাঝখানের দূরত্ব বেশি। 
  • চীনা রাজহাঁস দুই ধরনের হয়ে থাকে, যেমন-সম্পূর্ণ সাদা ও বাদামি ধূসর রঙের। 
  • প্রাপ্ত বয়স্ক হাঁসা ও হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ৪.৫ - ৫.৪৫ কেজি ও ৩.৬০ - ৪.৫৫ কেজি হয়ে থাকে ।

 

ছাই রঙের পিঠওয়ালা রাজ (Ash-backed Goose)

  • এদের উৎপত্তি আমেরিকায়। 
  • এরা আকারে মাঝারি । 
  • এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো ৰুক পুরু ও মাংসল, পিঠ বাঁকা, মাথা বড় ও বাঁকানো। 
  • মাথার রঙ সাদা।
  • গলার উপরের রঙ ছাই এবং নিচের রঙ সাদা। 
  • পিঠের রঙ সাদা। 
  • ঠোঁট লালচে, চোখ নীল এবং পা ও পায়ের পাতা লালচে। 
  • প্রাপ্তবয়স্ক হাঁস ও হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ৭.৭ ও ৬.৮ কেজি।

পিল গ্রীমস (Pill Grimes )

  • এ জাতের উৎপত্তি বৃটেনে। 
  • এদের বুক গভীর, পুরু ও মাংসল। 
  • ডানা লম্বা ও মজবুত। দেহ সামান্য খাড়া।
  • মাঝারি আকারের মাথাটি ডিম্বাকৃতির। 
  • পালক শক্ত, উজ্জ্বল আঁটোসাটো। 
  • হাঁসা সাদা রঙের, তবে এর ডানা ও পিঠে ধূসর রঙের দাগ আছে। 
  • হাঁসির মাথায় সাদা ও ধূসর রঙের মিশ্রণ। 
  • গলা ও বুকের ধূসর রংয়ের পালক ক্রমশ পেছন দিকে ফ্যাকাশে হতে হতে সাদা রঙে পরিণত হয়েছে। 
  • ঠোঁট কমলা 
  • চোখ ঘোলা বাদামি রঙের। 
  • পা ও পায়ের পাতা কমলা রঙের। 
  • প্রাপ্তবয়স্ক হাঁসা ও হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ৩.৩৫ ও ৫৯০ কেজি হয়ে থাকে।

 

রোমান রাজহাঁস ( Roman Goose)

  • এদের উৎপত্তি ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায়। 
  • এরা আকারে ছোট, উজ্জ্বল সাদা রঙের। 
  • রাজহাঁসের দেহ সুঠাম গতীর ও গোলাকার।
  • এরা শান্ত স্বভাবের। 
  • দেহে হাড়ের তুলনায় আনুপাতিক হারে মাংসের পরিমাণ বেশি। পলা খাড়া। পা খাটো। 
  • ঠোঁট, পা ও পায়ের পাতা কমলা এবং চোখ হালকা নীল রঙের। 
  • প্রাপ্তবয়স্ক হাঁসীর ওজন যথাক্রমে ৫.৪৫ - ৬.৩৫ কেজি ও ৪.৫৫ - ৫.৪৫ কেজি হয়ে থাকে। 
  • রোমান রাজহাঁস আকারে ছোট। 
  • উজ্জ্বল সাদা রঙের এ রাজহাঁসের দেহ সুঠাম, গভীর ও গোলাকার।

 

সিবাস্টোপল রাজহাঁস (Sebastopol Goose)

  • এ জাতের উৎপত্তি পূর্ব ইউরোপে । 
  • এ জাতের রাজহাঁসের দেহ খাড়া, পেচানো ও অবিন্যস্ত সাদা পালকে আবৃত। 
  • এরা আকারে মাঝারি। 
  • ওজনের তুলনায় এদেরকে দেখতে অনেক বড় মনে হয়। 
  • বেশ মাংসল হয়ে থাকে। 
  • বুক বেশ পুরু ও গভীর। 
  • পা খাটো ও মজবুত। 
  • পা ও পায়ের পাতা কমলা রংয়ের চোখ উজ্জ্বল নীল রঙের। 
  • প্রাপ্তবয়স্ক হাঁসা ও হাঁসির ওজন যথাক্রমে ৬.৩৫ ও ৫.৪৪ কেজি হয়ে থাকে।

দেশী রাজহাঁস : 

বাংলাদেশে রাজহাস পালন তেমন জনপ্রিয় নয়। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এদেশে রাজহাঁস পোষা হয় না। তবে অনেকে সখ করে পুষে থাকেন । দেশী রাজহাঁসগুলোর মধ্যে দু'ধরনের রঙ দেখা যায়। একটির দেহের রঙ কিছুটা আফ্রিকান রাজহাঁসের রঙের ন্যায়। অন্যটি পুরোপুরি সাদা।

 

 

Content added By
Promotion